রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কাজে সহায়তা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই নাঈম ইসলামকে এবার দুবাই ভ্রমণে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এক আমিরাত প্রবাসী।
এর আগে শুক্রবার শিশু নাঈমকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার দেওয়ার পাশাপাশি তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন দুবাই প্রবাসী ওমর ফারুক। এ বিষয়ে শুক্রবারই ‘সেই নাঈমের জন্য পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয় সমকাল অনলাইনে। শনিবার মুদ্রিত সমকালেও বিষয়টি নিয়ে ‘বনানীর হিরো শিশু নাঈম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সমকালে সংবাদ দেখে শনিবার জাহাঙ্গীর হোসাইন নামে আরেক প্রবাসী শিশু নাঈমকে দুবাই ভ্রমণে নেওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর সমকালকে বলেন, ‘রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে নাঈমের মানবিক কাজ আমাকে মুগ্ধ করেছে। যারা দুর্ঘটনা বা সংকটকালীন সময়ে নিঃস্বার্থে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায় তাদের কাতারে আজ নাঈমের নাম উঠে এসেছে। আমি চাই তাকে দুবাই ভ্রমণে নিয়ে আসতে। ভিসা, টিকেট থেকে শুরু করে দুবাইয়ে তার এক মাসের যাবতীয় খরচ আমি বহন করবো।’
নাঈমকে দুবাই ভ্রমণে নিতে জাহাঙ্গীর হোসাইনের এই আগ্রহের কথা শনিবার মোবাইল ফোনে নাঈমের মা নাজমা বেগমকে জানান এই প্রতিবেদক। খবরটি শুনে নাজমা বেগম আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আপনারা নাঈমের জন্যে অনেক করছেন। আল্লাহ হয়তো নাঈমের কপালে ভালো কিছু রেখেছেন। তার দুবাই যাওয়ার ব্যাপারে আমি সম্মতি দিচ্ছি।’
দুবাই ভ্রমণে যেতে হলে নাঈমকে প্রথমেই পাসপোর্ট বানাতে হবে। এ বিষয়ে নাজমা বেগম বলেন, ‘নাঈমের পাসপোর্ট নাই। আপনারা তার পাসপোর্টটা দ্রুত করে দেওয়ার ব্যবস্থা করলে সে দুবাই যেতে পারবে।’
দুবাই ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছে শুনে নাঈম নিজেও খুশি। সে জানায়, সকালেও অনেকে তাকে দেখতে আসে। কিন্তু দুবাই যেতে দাওয়াত পাওয়া তার জন্য অনেক আনন্দের।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপের ছিদ্র চেপে ধরে রাখা একটি শিশুর ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছিদ্র স্থানটি পলিথিন দিয়ে পেঁচিয়ে নাঈম ইসলাম নামের শিশুটি চেপে বসে থাকে পাইপের ওপর, যাতে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। কড়াইলের বউবাজার বস্তিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে সে। তার বাবা রুহুল আমিন মোল্লা ফেরি করে ডাব বিক্রি করেন। মা নাজমা বেগম গৃহিণী। দুই ভাইবোনের মধ্যে নাঈম বড়। সে স্থানীয় আনন্দ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-